উঃ- সামাজিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে শিন করে, আলোচনা :

পরিবর্তনশীলতা মানবসমাজের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য। পরিবর্তনের ফলে সর্বদা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন জন্য স কখনো নিম্নমুখা আবার কখনো উষ্ণর্মিনী হয়। নতুন ভাবনার পাশাপাশি সমাজে কখনো কখনো পুরাতন ভাবনারও পুনরাবৃত্তি চোখে পড়ে। সামাজিক ঐতিহ্য কৃষ্টি, চাহিদা ও সম্মান সব কিছুই সামাজিক পরিবর্তনের ফলে ঘটে থাকে। বলা বাহুল্য, শিক্ষা এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

   - সামাজিক পরিবর্তনে শিক্ষার ভূমিকা নারীশিক্ষা প্রসারে প্রাচীন বা মধ্যযুগে নারীদের যে সামাজিক মর্যাদা ছিল আধুনিক যুগে তা অনেকাংশে পাল্টে গিয়েছে। সামাজিক ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকা এখন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নারী এখন পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিভিন্ন ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে। নারী-পুরুষের সমানাধিকার এখন স্বীকৃত। এই পরিবর্তনে শিক্ষাই মূল ভূমিকা নিয়েছে। মেয়েদের সামাজিক মর্যাদা প্র শিক্ষা যথেষ্ট সহায়তা করেছে। শিক্ষার আলো না ছড়ালে নারীর সার্বিক উন্নয়ন অসম্ভব।

 মূল্যবোধে বদল : বর্তমানে মানুষের জীবনযাত্রায় অহরহ বদল ঘটো এর ফলে মানুষের মধ্যে জন্ম নিচ্ছে নতুন নতুন মূল্যবোধ। এটাই মা আচার-আচরণ পরিবর্তনে ভূমিকা নেয়। শিক্ষা যত সম্প্রসারিত হচ্ছে, তত উন্নত মূল্যবোধের অধিকারী হয়ে উঠছে। সামাজিক পরিবর্তনে উন্নত মূল্যবোধের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নব নব মূল্যবোধ মানুষে আচরণে বদল আনতে সাহায্য করে। ও শিক্ষায় প্রযুক্তি প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সমাজে বসবাস মূল্যবোধ, ভাবনাচিন্তা সব কিছুর উপর প্রভাব বিস্তার করে। নগরায়ণ শিল্পায়ন সব কিছুর ক্ষেত্রে প্রযুক্তিই মূল চালকের প্রন করে। বিজ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তির কল্যাণেই নতুন নতুন কল-কা বাড়ছে উৎপাদনের পরিমাণ। এক্ষেত্রে দক্ষ শ্রমিক ে ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার অন্যতম ফসল প্রযুক্তিনি আনয়নে ভূমিকা নেয়। কি পরিবর্তন এডুকেশন সংরক্ষণ নিত্যনতুন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও জ্ঞানরাশি শিক্ষাে প্রসারিত করছে। সামাজিক নিয়ন্ত্রণে অন্যতম ভূমিকা নেয় জ্ঞানের সংর যথাযথ সঞ্চালন। তথ্য ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে জ্ঞানের বিস্ফোরণের কারণে স গভীর পরিবর্তন এসেছে। তাই সামাজিক পরিবর্তনে শিক্ষার ভূমিকা  করা যায় না। 

 মনোভাবে পরিবর্তন : সামাজিক পরিবর্তনে দরকার সমাজে বসবাস মানুষের পারস্পরিক সহমর্মিতা প্রত্যেক মানুষকে হয়ে উঠতে হবে দায়বদ পরিশ্রমী। এক্ষেত্রে শিক্ষাই মানুষকে অলসতা দূর করে কর্মক্ষম হয়ে উ প্রেরণা জোগায় বর্তমানে মানুষের মনোভাবে যে পরিবর্তন এসেছে, এর আছে শিক্ষার প্রসার। এটাই সামাজিক পরিবর্তনে অন্যতম ভূমিকা নেয়।

কুসংস্কার বর্জন : প্রাচীনকালে যে কোনো ঘটনার জন্য কুসংস্কার দায়ী করা হতো। এখন মানুষ দিন-রাত্রি, ঝড়-বৃষ্টি, গ্রীষ্ম-বর্ষা ইত্যাদির জেনেছে। এখন, অসুখের ক্ষেত্রে ভগবানের কাছে প্রার্থনার পরিবর্তে মা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা আগে চিন্তা করে। এভাবেই মৃত্যু অনেকটাই কমে গিয়েছে। ব্যক্তির এই মানসিক পরিবর্তনে শিক্ষাই মূল ভূমি নিয়েছে। এটাই সামাজিক পরিবর্তন সংঘটনে সহায়তা করছে।

গোষ্ঠীজীবন : মানুষ পরস্পরের উপর নির্ভরশীল। কেউ একা বাঁচান পারে না-এই ৰোধ থেকেই মানুষ সংঘবদ্ধ হয়েছে। গোষ্ঠীবদ্ধ জীবনযাপনে অভ্যাস মানুষকে সামাজিক হতে সাহায্য করেছে। মানুষকে সংঘবদ্ধ  শিখিয়েছে শিক্ষা।

ও আচরণ : মানুষের বহুবিধ আচরণ নিয়ন্ত্রণে পরিবার থেকে শুরু কে বিভিন্ন ধর্মীয় সংস্থা গড়ে উঠেছে। কিন্তু এই সংস্থাগুলি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়ে না। এক্ষেত্রে মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ ও সংশোধনে শিক্ষার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
সবশেষে বলা যায়, সামাজিক পরিবর্তনে শিক্ষার প্রসার অন্যতম একটি উপাদান। শিক্ষাই গড়ে তোলে গণতান্ত্রিক সমাজ। শিক্ষাই মানবসভ্যতাকে নিয় করে। ও শিক্ষাগত সমাজবিজ্ঞানে শিক্ষালয় পরিচালন এবং প্রশাস বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সামাজিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত হয় তাদের মধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষালয়। সু শিক্ষালয়ের সংগঠনে কাঠামো এবং প্রশাসন সুপরিকল্পিত না হলে, সা "নিয়ন্ত্রণের প্রয়াস ফলপ্রসু হবে না। এই কারণে শিক্ষাগত সমাজবিজ্ঞানে সহকারে শিক্ষালয় সংগঠন, পরিচালন এবং প্রশাসন সম্পর্কিত তথ্যাদি > করা হয় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
      • প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে পাঠ তারা শ্রেণিকক্ষে একটি সামাজিক দল বা গোষ্ঠীর মতো ভূমিকা পালন ক দল বা গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি ব্যক্তির প্রতিক্রিয়ার প্রকৃতি নির্ধারণ করে। শ্রেণিকে শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়াও দলগত মনোভাব দ্বারা নির্ধারিত হয়। এধরনের আন্ত নির্ধারণ প্রক্রিয়াকে বলা হয় দলীয় গতিধর্মিতা। শিক্ষাগত সমাজবিজ্ঞানে। বিশেষ আলোচনার ক্ষেত্রকে বলা হয় শিক্ষার দলীয় গতিধর্মিতা'।
আধুনিক অর্থে সমাজবিজ্ঞান হলো সামাজিক সম্পর্ক বিষয়ক বিজ্ঞ শিক্ষাগত সমাজবিজ্ঞানেও সাধারণ সমাজবিজ্ঞানের মতোই পারস্পরিক মানসি সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়।

সমাজবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। যে সমাজ-সংস্থাগুলির কোনোটি একক বা বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করতে পারে ন সামাজিক আদর্শ প্রতিষ্ঠা এবং সমাজ-অগ্রগতির ধারাকে বজায় রাখতে সামাজি সংস্থাগুলিকে পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রেখে সমবেতভাবে প্রচেষ্টা চালানে হয়। শিক্ষাগত সমাজবিজ্ঞানে, শিক্ষালয়ের সঙ্গে অন্যান্য সামাজিক সং কাজের সুষ্ঠু সমন্বয়ের বিষয়ে বিশেষভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
মন্তব্য : এগুলি ছাড়াও শিক্ষাগত সমাজবিজ্ঞানে অন্যান্য বিষয়ে আলোচন করা হয়। বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে যে সকল সমস্যার উদ্ভব হয়, সেগুলির সামাজি তাৎপর্য নির্ণয়ের পাশাপাশি সমাজ অগ্রগতি সহায়ক সমাধানের পথ অনুসন্ধান করে। তাই শিক্ষাগত সমাজবিজ্ঞানের আলোচনার ক্ষেত্র নির্দিষ্ট কয়েকটি শিরোনামের মধে সীমাবদ্ধ নয়। মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে ও সমাজজীবনের উন্নতি সাধনে শিক্ষার যে দায়িত্ব আছে সেই দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য শিক্ষাবিজ্ঞান সমাজবিজ্ঞানের জ্ঞানকে আপন ক্ষেত্রে প্রয়োগে কোনো দ্বিধা করে না। আর শিক্ষাবিজ্ঞানকে এই সহায়তা দানের জন্যই শিক্ষাগত সমাজবিজ্ঞানের সৃষ্টি।