উঃ:- ভারত ইতিহাসে ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাব (Influence of Geography on Indian History)
ইতিহাসের সঙ্গে ভূগোলের সম্পর্ক অতি ঘনিষ্ঠ। পৃথিবীর যে কোনও দেশের ইতিহাসের উপর সেই দেশের ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাব অতি স্পষ্ট। নীল নদকে কেন্দ্র করে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। তাই প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতাকে বলা হত নীল নদের দান"। প্রাচীন সুমের ও মেসোপটেমিয়া। সভ্যতায় টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর গুরুত্ব অসীম। পর্বত-সঙ্কুল পরিবেশের জন্য প্রাচীন গ্রিসে কোনও ঐক্যবদ্ধ সাম্রাজ্য গড়ে উঠতে পারে নি সেখানে গড়ে ওঠে প্রচুর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নগর-রাষ্ট্র। গ্রিসদেশ সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায় তার অধিবাসীরা সামুদ্রিক বাণিজ্য ও উপনিবেশ বিস্তারে তৎপর হয়। পরবর্তীকালে ইংল্যান্ডের পৃথিবীব্যাপী সামুদ্রিক বাণিজ্য ও উপনিবেশ স্থাপনের মূলেও ছিল তার ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাব। জনৈক ঐতিহাসিক মন্তব্য করেছেন যে, ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে ভূগোল ও কালপঞ্জি হল চন্দ্র ও সূর্য এবং ডান চক্ষু ও বাম চক্ষু। ফরাসি দার্শনিক বোদ্যা (Bodin) বলেন যে, "ভূগোল ও আবহাওয়া বিভিন্ন জাতির ভাগ্য নির্ধারণ করে।" বলা বাহুল্য, ভারতের ক্ষেত্রেও এর কোনও ব্যতিক্রম হয় নি। ভারতীয় ইতিহাস ও সভ্যতা এবং ভারতবাসীর জীবনদর্শন ও দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাব অতি ব্যাপক।
0 Comments