উত্তর : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচিত পল্লীসমাজ উপন্যাসের অন্যতম এক চরিত্র বিশ্বেশ্বরীর। তিনি এই বক্তবটি রমেশকে করেছিলেন। রমেশের গ্রাম ছিল কুঁয়াপুর সেই গ্রামে ছিল একটি খাল । আর অন্য গ্রামটি ছিল খালের ওপারে। জমিদারির আওতায় ছিল পীরপুর গ্রাম। কিন্তু এই গ্রামে ছিল জাতপাতের ভেদাভেদ যার জন্য গ্রামের মুসলমানরা বিদ্যালয়ে পড়বার কোনো অধিকার ছিলনা। রমেশ তা জানতে পেরে বিস্মিত হয়ে যায় । গ্রামের এরূপ আচরণ সমাজের গতিতে অবক্ষয় হবে।
রমেশ ছিল তারিণী ঘোষালের ছেলে। তার গ্রাম ছিল কুঁয়াপুর। সেই গ্রামে মানুষের কাছে ও একই রকম অবস্থা। অশিক্ষা অর্থাৎ শিক্ষার অভাব এই গ্রামের মানুষেরা একে অপরের সাথে যুদ্ধ করে চলে। গ্রামের ঝগড়া নিত্যদিনের ঘটনা। গোবিন্দ গাঙ্গুলির সাথে খেন্তি বামনির ঝগড়া তার মাথা লজ্জায় নীচুহয়ে যায়। রমেশ দেখেছিল গ্রামে ব্রাক্ষণ দের প্রাধান্য বেশি। তারা সকল গ্রাম্য মানুষকে জাতপাতের দ্বন্দ্বে ও সংকীর্ণতার দ্বন্দ্বে আবদ্ধ করে রেখেছে। সেই সঙ্গে আবার অপর একটি গ্রাম পীরপুর।
সেই গ্রামের মানুষদের মধ্যে নীচ মানসিকতা এসব কিছুর রয়েছে। অশিক্ষা অতীতে ব্রাক্ষণ সম্প্রদায়ের প্রাধান্য থাকায় হিন্দুসমাজের সঙ্গে জাতপাতের দ্বন্দ্ব বাধে। তাদের কাছে ধর্ম রক্ষা করাই ছিল স্বার্থ। তারা কুসংস্কারকে প্রাধান্য দিত। এর ফলে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি হত। মানুষ মানুষকে অপমান করতে থাকে। আবার গ্রামে দেখা গিয়েছিল নীচু জাতির হিন্দুরা ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হয়ে গিয়েছিল। মুসলমান সমাজকেও দলিত হয়েই চলতে হয় গ্রামের মানুষের যে মূলরূপ মনুষ্যত্ব তাকে হারিয ফেলে ছিল।বিশ্বেশ্বরী সব ঘটনার মাধ্যমে মন্তব্যটি করেছে।
৯০ উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ : কুঁয়াপুর গ্রামে ছিল রমেশের বাস।সেখানে মূলত হিন্দু প্রজারা থাকত। আর ওপর দিকে আর একটি গ্রাম যেখানে থাকত মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষেরা। তবে কুঁয়াপুর গ্রাম ও পীরপুর গ্রাম ও ছিল রমেশের জমিদারির আওতায়। গ্রামের মানুষের ঝগড়া তর্ক- বির্তকে পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে মামলা করে দেয়। গ্রামের মানুষের স্বার্থসিদ্ধি দেখে রমেশ হতভম্ব পরে। মুসলমান সমাজের মধ্যে ঐক্য বোধ ছিল।
কিন্তু হিন্দু সমাজের ক্ষেত্রে সেই বোধ নেই। হিন্দু সমাজের নীচতা দেখে গ্রাম সম্বন্ধে তার বিরক্তি অনুভূতি হয়েছিল। এইসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বেশ্বরী বোঝাতে চেয়েছেন কেবল জাতিভেদ নয়, দারিদ্রতাও তাদের মধ্যে দুর্দশা ও মতবিরোধ দেখা দেয়। মুসলমানেদের মধ্যে থাকলেও তারা আড়াল করেছে কিন্তু হিন্দু সমাজের ক্ষেত্রে সেরূপ সততা নেই। রমেশ অন্য গ্রামকে দেখে এসে নিজের গ্রামকে বিচার করে সেক্ষেত্রে অনেক দিক পরিস্ফুট হয়। জ্যাঠাইমার কথার মাধ্যমে রমেশ গ্রামকে সুন্দর করে সাজিয়েছে।
0 Comments