সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (টীকা)
১। কামিনীর মা
‘পল্লীসমাজ' উপন্যাসে কামিনীর মা এক অপ্রধান চরিত্র । কামিনীর মা জাতিতে নীচ ছিল অর্থাৎ সদগোপ। প্রাচীন প্রচলিত কথা- ব্রাহ্মণের সেবা-যত্ন করলে পুণ্য | লাভ হয়। কামিনীর মা এই রীতিতে বিশ্বাসী ছিল। তাই তিনি দরিদ্র ব্রাহ্মণের ছেলে মেয়েরা যাতে খাবার পায় সেই বিষয়ে যথেষ্ট সচেষ্ট ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণের সেবা সুষ্ঠুভাবে হওয়ার জন্য নিজের সর্বস্ব ত্যাগ করতেও কুণ্ঠিত নন। কামিনীর মা সদ্গোপ ছিলেন, তাই তিনি পুণ্য অর্জনের জন্য দ্বারিক চক্রবর্তীর অসহায় ছেলেমেয়েদের দেখা শোনার দায়িত্ব ভার গ্রহণ করে। তাছাড়াও গ্রাম্য সমাজে মানুষে মানুষের মেলবন্ধন বেশি তাদের নিজেদের মধ্যে একাগ্রতা, ভ্রাতৃত্ববোধ দায়িত্বপরায়ণ, স্নেহ ও আন্তরিকতা বেশি। একে অপরের বিপদে সহজেই এগিয়ে আসে। পুণ্য লাভের আশা সকলের মধ্যেই থাকে তাই কামিনীর মা-ও ব্যতিক্রমী নয়। তাই তিনি তার সহজ, সরল মানসিকতা নিয়ে সহজেই তাদের সাহায্যের জন্য তৎপর হয়েছিল।1. Kamini's mother :-
Kamini's mother is a minor character in the novel 'Pallisamaaj'. Kamini's mother was low in caste i.e. Sadagopa. The ancient saying - the service of Brahmin is virtue gains Kamini's mother believed in this tradition. So he was diligent enough to ensure that the sons and daughters of the poor Brahmins got food. He does not hesitate to sacrifice everything for the proper service of the Brahmin. Kamini's mother was Sadgopa, so she took on the responsibility of visiting the helpless children of Dwarika Chakraborty to gain merit. Moreover, in rural society, there is more people-to-people contact, they have more concentration, brotherhood, responsibility, affection and sincerity. They come easily to each other's danger. The hope of attaining virtue resides in everyone, so Kamini's mother is no exception. So he, with his simple, simple mindedness, readily came to their aid.
২। বিশেশ্বরী চরিত্র :-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর ‘পল্লীসমাজ' উপন্যাসে বিশ্বেশ্বরী অন্যতম এক নারী চরিত্র। বিশ্বেশ্বরী শরৎচন্দ্রের কল্পনায় সৃষ্টি। তাঁর সাহিত্যে প্রায়ই এরকম নারী চরিত্রের দেখা যায়। যারা কল্পলোকের অধিবাসী। পল্লীসমাজ উপন্যাসে বিশ্বেশ্বরী এমন এক নারী চরিত্র, যার মধ্যে স্নেহময়ী মায়ের মতো বাৎসল্য লক্ষ্য করা যায়। বিশেশ্বরী যে একজন আদর্শময়ী নারী তা তার চরিত্রের মধ্যে প্রকাশ পায়। বিশেশ্বরী একজন মা, তবে তার ছেলে বেণীর প্রতি ভালোবাসা দেখালেও তাকে তাচ্ছিল্য করেছে। সে তার স্নেহবাৎসল্য রমেশকে দেখিয়েছে। সে ও তার ছেলে একই গ্রামে থাকে। কিন্তু বেণী ঘোষাল অত্যাচারী লোক হওয়ায় তার মা বিশেশ্বরী দেবী তাকে স্নেহ বাৎসল্য দেখায় না। তাই তিনি বলেছেন -“এখানে যদি মরি বেণী আমার মুখে আগুন দেবে। সে হলে তো কোন মতেই মুক্তি পান না। ইহকাল তো চলেই গেল বাবা, পাছে পরকালটাও এমনি জ্বলে পুরে মরি আমি সেই ভয়ে পালাচ্ছি রমেশ।” গ্রামে থেকে রমেশ বুঝতে পারে যে গ্রামবাসীদের মধ্যে শিক্ষার অভাব আছে। তাই এই গ্রামবাসীদের ঘৃণা করা ঠিক নয়। জ্যাঠাইমা ও রমেশকে সুন্দর পথ দেখিয়েছে। তাকে ন্যায়ের আদর্শে চলার শিক্ষা দিয়েছে। তাই তিনি বলেছেন গ্রামে থেকে গ্রামের উন্নতিতে মন দিতে। জাতিভেদ, কুসংস্কার, নিরর্থক দলাদলি রমেশের মনে প্রশ্ন জাগে । গ্রাম্য সমাজকে প্রতিকার করার জন্য বিশেশ্বরী রমেশের অনুকম্পা জাগ্রত করেছে।
0 Comments