উত্তর :- প্রতিটি পৌরসভা ১০ থেকে ৩০ জন নির্বাচিত কমিশনার নিয়ে গঠিত হবে। তবে সঠিক সদস্যসংখ্যা রাজ্যসরকার কর্তৃক নির্ধারিত হয়। সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে তাঁরা নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালের সংশোধিত পৌরসভা বিলে সর্বাধিক ৩৫ জন কমিশনার রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। তাছাড়া ঐ বিলে মহিলা ও তপসিলী জাতি ও উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৫টি ওয়ার্ডযুক্ত পৌরসভার ক্ষেত্রে ১টি আসন ও তার বেশি ওয়ার্ডযুক্ত পৌরসভায় ২টি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকবেই। আর তপশিলী জাতিদের আসনসংখ্যা রাজ্যসরকার স্থির করবেন এবং কমপক্ষে একটি আসন সংরক্ষিত থাকবেই। আবার তপশিলী উপজাতিদের আসনসংখ্যা রাজ্যসরকার স্থির করলেও ৫০০ জন তপশিলী উপজাতি-পিছু একটি আসন সংরক্ষিত থাকবেই। পৌরসভার Chairman বা . সভাপতি এবং Vice-Chairman বা সহ-সভাপতি কমিশনারদের দ্বারা নিজেদের মধ্য থেকেই নির্বাচিত হন। তাঁদের কার্যাকালের মেয়াদ ৪ বছর। রাজ্যসরকার প্রয়োজনে কমিশনারদের কার্যকাল ১ থেকে ২ বছর বাড়াতে পারেন। ৭৪-তম সংবিধান সংশোধন তাঁদের কার্যকালের মেয়াদ ৫ বছর হয়েছে। পৌর আইন অনুসারে পৌরসভায় ৪ ধরনের কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। এই কমিটিগুলি হলো- 1.বরো কমিটি, 2. ওয়ার্ড কমিটি, 3. বিশেষ কমিটি, 4 যৌথ কমিটি।প্রসঙ্গত বলা যায়, ৩ লক্ষ বা তাঁর বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত পৌরসভায় বরো কমিটি এবং ওয়ার্ড কমিটি গঠন আবশ্যিক।
তাছাড়া, পৌরসভঅর দৈনন্দিন কাজ পরিচালনার জন্য রাজ্যসরকার কমিশনাদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে একজন কার্যনির্বাহী আধিকারিক (Executive Officer), একজন কর্মসচিব (Secretary), একজন বাস্তুকার (Enginer), একজন করে স্বাস্থ্য পরিদর্শক (Sanitary Inspector) ও স্বাস্থ্য আধিকারিক (Health Officer), অর্থ আধিকারিক (Finance Officer), একজন হিসাবপরীক্ষক (Accounts Officer) প্রমুখ ব্যক্তিদের নিয়োগ করেন। তাঁদের সমস্ত ব্যয়ভার রাজ্যসরকারই বহন করে থাকেন।
ক্ষমতা ও কার্যাবলি
পৌরসভার ক্ষমতা ও কার্যাবলিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলি হলো –
1. বাধ্যতামূলক,
2. স্বেচ্ছাধীন
3. অর্পিত।
বাধ্যতামূলক কার্যাবলির মধ্যে ৪টি প্রধান কাজ স্থান পেয়েছে। এগুলির মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক, উন্নয়নমূলক, জনকল্যাণমূলক এবং "জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত কাজ। পৌরসভার বাধ্যতামূলক কাজের তালিকায় যে ৪৯টি বিষয় রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- জল সরবরাহ, নর্দমা, পয়ঃপ্রণালী ও জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট নির্মাণ, বস্তি উন্নয়ন, জন্ম-মৃত্যু নথিভুক্তকরণ, বেআইনি গৃহ নির্মাণ বন্ধ, পরিবেশ দূষণ রোধ, মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ করা প্রভৃতি।
ও স্বেচ্ছাধীন কার্যাবলির তালিকায় উল্লিখিত ৪১টি বিষয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- পানীয় জল সরবরাহ, হাসপাতাল, দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণ, পাঠাগার নির্মাণ, অনাথ ও গৃহহীনদের জন্য নির্মাণ, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশ সাধন, সামাজিক শিক্ষাদান করা প্রভৃতি।
ও অর্পিত কার্যাবলির তালিকায় উল্লিখিত ১৭টি বিষয়ের মধ্যে। উল্লেখযোগ্য হলো: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, নগর পরিকল্পনা, অসামরিক প্রতিরক্ষা, ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ, বনসৃজন প্রভৃতি।
0 Comments