উত্তর:- মহম্মদ-বিন-তুঘলকের মৃত্যুর পর সুলতানি সাম্রাজ্যে যে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল । এরূপ পরিস্থিতিতে সঙ্গম বংশের হরিহর ও বুক্ক ১৩৩৬ খ্রিঃ বিজয়নগর সাম্রাজ্যে সলাম বংশের প্রতিষ্ঠা করেন। এই সকল বিদেশী পর্যটকদের ভৌগোলিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়। 

১. বিজয়নগর রাজ্যটি ছিল খুব সুন্দর, পর্যটকগণ তাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিজয়নগর রাজ্যকে ইটালির রোমনগরীর সাথে তুলনা করেছেন । 

২. এই শহরটি সাতটি পাঁচিল দিয়ে আবৃত ছিল যা বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে এই রাজ্যকে দীর্ঘকাল সুরক্ষিত রেখেছিল।।

৩. রাজপ্রাসাদের কাছে ছিল ফলের বাগান এবং নগরের পুকুরের পাশে ছিল অনেক তাল গাছের সারি। 

৪. নগরে অনেক খাল ছিল যেগুলি নগরবাসীরা নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করত। এই খালগুলি দিয়ে স্বচ্ছ জল প্রবাহিত হতো। 

৫. নগরে অসংখ্য লোক বসবাস করত, তাদের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষিকাজ। 

.৬. কৃষিকাজে জলসেচের সুবন্দোবস্ত ছিল। চাল ও গম ছিল বিজয়নগরের প্রধান কৃষিজ ফসল ৷ 

.৭. ভূমিরাজস্ব ও কৃষিরাজস্ব থেকে প্রাপ্ত করই ছিল বিজয়নগর রাজ্যের আয়ের মূল উৎস। 

৮. বিজয়নগর রাজ্যের সাথে পোর্তুগালের সুমধুর বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। ষাঁড়ের মাধ্যমে সেইসময় বাজারে পণ্য সামগ্রী বহন করা হতো। 

৯. সমাজে ধনী ও দরিদ্র এই দুই শ্রেণির মানুষ বসবাস করত। ধনী ব্যবসায়ীরা সুখেই জীবন অতিবাহিত করতেন।

 ১৩৩৬ থেকে ১৯৪ খ্রিঃ এর মধ্যে বিজয়নগর রাজ্যে চারটি রাজবংশ রাজত্ব করেছিল-

1. সলাম রাজবংশ (১৩৩৬ ১৪৮৬ খ্রিঃ)
2. সাত রাজবংশ (১৪৮-১২০৫ খ্রিঃ)
3. তুলুও বংশ (১৫০৫ 20 )
4. আরবিত বংশ (১৫৭०-1892 )

তুলুভ বংশের রাজা কুমুদের প্রায় ছিলেন বিজয়নগর রাজ্যের শ্রেষ্ঠ শাসক । তিনি শিল্প সাহিত্য, সৎগীত ও জ্ঞানী ব্যাক্তিদের যথেষ্ট পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তার আম বিজয়নগর রাজ্যের শিল্পসংস্কৃতি ও সাহিত্য ব্যাপক উৎকষতা লাভ করেছিল, রাম কুরদের রায় -

১. শিল্প, সাহিত্য, সংগীতার জন্য সর্বদাই অগ্রসর হতেন ।
২. তাঁর রাজসভায় আটজন পণ্ডিতব্যক্তি ছিলেন এদের একত্রে ' অষ্টাদিকগজ" বলা হতো।।
৩. তিনি সাহিত্য অনুরাগী ছিলেন । তিনি নিজে তেলেগু ভাষার আমূক্তমাল্যদা গ্রন্থ রচনা করেন।
৪. তিনি অনেক মন্দির ও নির্মাণ করেছিলেন। তার মধ্যে অন্যতন হলো- রামস্বামী মন্দির, বুদ্ধস্বামী মন্দির ডিউল স্বামী মন্দির তিনি বিছুর উপাসক ছিলেন এবং সকল ধর্মের মানুষের প্রতি সহনশীল ছিলেন। তিনি রাম্মণদের বিশেষ মর্যাদা করতেন ।