সূচনা : ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ৪ মে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে চিনের ইতিহাসে যে নতুন অধ্যায়ের সংযোজন ঘটতে শুরু করেছিল তা পূর্ণতা পায়। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম অক্টোবর গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার চিন দেশের প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এই সময় মাও সেতুং ঘোষণা করেন— “We will work bravely and industriously to create our own civilisation world peace and freedom."promote

 গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের উত্থান :

কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠা : ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে চিনে কমিউনিস্ট দল গড়ে ওঠে যার সম্পাদক ছিলেন চেন-তু-শিউ। যদিও চিনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মাও সেতুং, চৌ এন-লাই প্রমুখ। মূল

লং মার্চ : চিনা রাষ্ট্রপতি চিয়ান কাই-শেখ ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ কমিউনিস্টদের প্রধান ঘাঁটি কিয়াংসি প্রদেশ আক্রমণের জন্য সেনাবাহিনী প্রেরিত করেন। এই সময় নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই প্রায় এক লক্ষ চিনা কমিউনিস্ট তাদের পরিবার পরিজন সহ কিয়াংসি ত্যাগ করে উত্তর চিনের সেনসি প্রদেশে দীর্ঘপথ যাত্রা শুরু করে এবং সাধারণ মানুষের আন্তরিক সহানুভূতি ও সাহায্য লাভ করে।

শিয়ং ফু ঘটনা : 

মাও সে তুং-এর নেতৃত্বে চিনা কমিউনিস্টরা উত্তর চিনের সেনসি প্রদেশে একটি প্রায় স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যার রাজধানী ছিল শিয়াং ফু। এই সময় কমিউনিস্ট দমনে চিয়ান কাই শেখ একদল সেনা পাঠালে সেই সৈন্যরাই কমিউনিস্টদের দমনের পরিবর্তে সমর্থন করতে থাকে। এই সংবাদে বিচলিত চিয়াং নিজে শিয়াং ফুতে উপস্থিত হলে তাকে বন্দি করে লুকিয়ে রাখা হয়। যদিও দুই সপ্তাহ বন্দি থাকার পর তিনি মুক্তি পান ।

কমিউনিস্ট শক্তিবৃদ্ধি : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীতে চিনা কমিউনিস্ট ও কুমিং তাং দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। এইসময় কমিউনিস্টরা ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে চিনের কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণির সমর্থন লাভ করে।

কমিউনিস্ট দ্বারা প্রজাতন্ত্র গঠন : ক্রমবর্ধমান ও সামরিক শক্তির সহায়তায় মাও সেতুং-এর নেতৃত্বে চিনা কমিউনিস্টরা একের পর এক চিনের বিভিন্ন ভূখণ্ড দখল করতে থাকে কমিউনিস্টরা পিকিং দখল করে। অবশেষে ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে ১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয় জনগণের প্রজাতন্ত্র। যা গণপ্রজাতন্ত্রী চিন নামে খ্যাত। মাও সে তুং হন এর প্রথম সভাপতি এবং প্রধান মন্ত্রী হন চৌ-এন-লাই।

মূল্যায়ন : মাও-সে-তুং-এর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা কমিউনিস্ট দল চিনে যে গণ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল তা চিনকে বিশ্বের এক নয়া শক্তিরূপে পরিচিতি দিয়েছিল। দীর্ঘ ৩০ বছরের সংগ্রামের ফসলকে কাজের লাগিয়ে কমিউনিস্ট দল চিনে আধুনিকীকরণের পটভূমি গড়ে তুলেছিল। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে ১ অক্টোবর মাও সে তুং এক ভাষণে বলেন—“চিনবাসী আর কখনো দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধহবে না বা তারা কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপও মেনে নেবে না।”